ডেঙ্গু সতর্কতা সব সময়ে
Take each and every measures to avoid dengue fever and stay safe this season. Read more to learn about the prevention and how to treat it effectively.
ভীষণ মেধাবি একটি মেয়ে ছিল। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিল সে। সদ্যই একটি সরকারি ব্যাংকে যোগদান করেছিল। তাঁর ছিল সুখের সংসার। ভালবেসে বিয়ে করেছিল। ছিল প্রিয় স্বামী আর ফুটফুটে দুই সন্তান। এখন আর এসব কিছুই নেই তাঁর। ডেঙ্গু জ্বর নামক বিভীষিকার কাছে সব হারিয়েছে সেই মেয়ে! বিদায় নিয়েছে এই পৃথিবী থেকে। তাঁর অদ্ভুত উজ্জ্বলতায় মাখা হাসি মুছে গেছে চিরতরে।
আপনি কি জানেন? চলতি বছর ঢাকায় এ জ্বরে রোগীর সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়ে গেছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে! দেশে এ পর্যন্ত সাত হাজার চারশ পঞ্চাশ জন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন মারা গেছেন।
বর্তমানে সবচাইতে যেটি আতঙ্কের বিষয় সেটি হল, ডেঙ্গুতে আক্রান্তের প্রচলিত ধরন বদলে যাচ্ছে।
আগে ডেঙ্গু হলে প্রথমে উচ্চমাত্রার জ্বর, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথা, শরীর ব্যথা, হাড্ডিতে ব্যথা ও গায়ে র্যাশ হতো। পরবর্তী সময়ে চার থেকে সাত দিনের মধ্যে ডেঙ্গু হেমোরেজিকের নানা লক্ষণ প্রকাশ পেত। কিন্তু চলতি বছর জ্বর ওঠার এ ধরন পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর ওই রকম ব্যথা অনেকের ক্ষেত্রেই অনুভূত হচ্ছে না! কিন্তু যখন হাসপাতালে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয় তখন দেখা যায় তার শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে।
তবে লক্ষণ ও ধরন যেমনই হোক থাকতে হবে অতি সতর্ক। না হলে ঘটবে মৃত্যুর মত বড় ধরনের বিপর্যয়! ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা এবং এই ভাইরাস বাহিত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার কামড়ে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোন ব্যক্তিকে কামড়ালে, সেই ব্যক্তি ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু আক্রান্তদের সম্পূর্ণ ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতে হবে। এ ছাড়া যথেষ্ট পরিমাণে পানি, শরবত ও অন্যান্য তরল খাবার খেতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামল জাতীয় ব্যথার ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তবে অ্যাসপিরিন বা ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ব্যথার ওষুধ খাওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে! আর জ্বর থাকলে ঘরে বসে না থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনে কর্মকর্তাদের বলছেন, শুধু ওষুধ ছিটিয়ে ডেঙ্গু নিধন সম্ভব নয়। প্রয়োজন নাগরিকদের সচেতনতা। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা এরকম ছোটখাট আবদ্ধ জলাশয় রয়েছে। এছাড়া বাড়ির ছাদ ও বারান্দার ফুলের টব। কিংবা দীর্ঘদিন জমে থাকা কোন পাত্রের পানিতে বংশ বিস্তার করতে পারে এডিস মশা। এসি, ফ্রিজে জমে থাকা পানিও বড় উৎস।